আখলাক (চরিত্র) অংশ

উত্তর: নবী ‘আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন: أكمل المؤمنين إيماناً: أحسنهم خلقاً “ঈমানের দিক দিয়ে পরিপূর্ণ মু’মিন, তাদের মধ্যে যে চরিত্রের দিক দিয়ে সবচেয়ে সুন্দর।” এটি তিরিমিযী ও আহমাদ বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: ০১- কেননা এটা আল্লাহ তা‘আলার মুহাব্বাতের কারণ।
০২- এবং সৃষ্টিজগতের ভালবাসার কারণ।
০৩- এটি মীযানে সবচেয়ে বেশী ভারী বস্তু।
০৪- আমলের পুরষ্কার ও সওয়াব উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়।
০৫- ঈমানের পূর্ণতার আলামত।

উত্তর: আল-কুরআনুল কারীম থেকে, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: إِنَّ هَذَا الْقُرْآَنَ يَهْدِي لِلَّتِي هِيَ أَقْوَمُ “নিশ্চয় এ কুরআন হিদায়াত করে সে পথের দিকে যা সরল-সুদৃঢ়।” [সূরা আল-ইসরা: ০৯] এবং সুন্নাতে নববী থেকে, এমনকি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: إنَّما بُعِثْتُ لِأُتَمِّمَ صالحَ الأَخلاقِ “আমি তো প্রেরিত হয়েছি উত্তম চরিত্রের পূর্ণতা দান করার জন্যে।” এটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: ইহসান: সর্বদা আল্লাহ তা‘আলার তত্ত্বাবধানের খেয়াল রাখা, কল্যাণে নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি মাখলূকের সাথে উত্তম আচরণ করা।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْإِحْسَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ “নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিটি বস্তুর উপরে ইহসানকে ওয়াজিব হিসেবে লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
ইহসানের কতিপয় সূরতসমূহ:
- আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাতের ক্ষেত্রে ইহসান, আর এটি হচ্ছে: ইবাদাতের ক্ষেত্রে ইখলাস নিশ্চিত করা।
- পিতা-মাতার প্রতি ইহসান, এটি কথা ও কাজের (নম্রতার) মাধ্যমে।
- আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি ইহসান।
- প্রতিবেশীর প্রতি ইহসান করা।
- ইয়াতিম-মিসকীনদের প্রতি ইহসান।
- তোমার সাথে খারাপ আচরণকারীর সাথে ইহসান।
- কথার মধ্যে ইহসান।
- বিতর্কের মধ্যে ইহসান।
- প্রাণীদের প্রতি ইহসান করা।

উত্তর: ইহসানের বিপরীত হচ্ছে: খারাপ আচরণ করা।
* যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে: আল্লাহ তা‘আলার ইবাদাতের ক্ষেত্রে ইখলাস নষ্ট করা।
* পিতামাতার নাফরমানি করা।
* আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করা।
* প্রতিবেশীদের সাথে খারাপ আচরণ করা।
* ফকীর-মিসকীনদের সাথে ভাল ব্যবহার না করা, এছাড়াও অন্যান্য খারাপ কথা ও কাজ।

উত্তর:
০১- আল্লাহ তা‘আলার হকসমূহ সংরক্ষণের আমানত।
সূরত:
সালাত, যাকাত, সিয়াম ও হজ্জসহ যেসব ইবাদাত তিনি আমাদের উপরে ফরয করেছেন, তা আদায়ের ক্ষেত্রে আমানত রক্ষা করা।
০২- বান্দার হক সংরক্ষণের আমানত।
- মানুষের সম্মান রক্ষা করা।
- তাদের ধন-সম্পদ (রক্ষা করা)
- তাদের রক্ত বা জান (রক্ষা করা)
- তাদের গোপন বিষয়সমূহ এবং তোমার কাছে রাখা মানুষের সমুদয় আমানত রক্ষা করা।
সফল বান্দাদের সিফাত বর্ণনা করে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
وَالَّذِينَ هُمْ لِأَمَانَاتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رَاعُونَ “আর যারা নিজদের আমানতসমূহ ও অঙ্গীকারে যত্নবান।” [সূরা আল-মুমিনূন: ০৮]

উত্তর: খিয়ানত, তা হচ্ছে: আল্লাহ তা‘আলার হক এবং বান্দাদের হকসমূহ নষ্ট করা।
নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন: «آيَةُ المُنافِقِ ثَلاثٌ» “মুনাফিকের আলামত তিনটি” তার মধ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন: «وإذا اؤْتُمِنَ خانَ» “যখন আমানত রাখা হয়, তখন সে তা খিয়ানত করে।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি।

উত্তর: কোন বস্তুর প্রকৃত অবস্থা অথবা কোন ঘটনার বাস্তবতার অনুকূলে সংবাদ প্রদান করা।
এর সূরত হচ্ছে:
মানুষের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে সত্য বলা।
ওয়াদার ক্ষেত্রে সত্যবাদিতা রক্ষা করা।
প্রতিটি কথা ও কাজে সত্যবাদিতা রক্ষা করা।
নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন: إنَّ الصِّدقَ يَهْدي إلى البِرِّ، وإنَّ البِرَّ يَهْدي إلى الجنَّةِ، وإنَّ الرَّجلَ لَيَصْدُقُ حتَّى يكونَ صِدِّيقًا “সত্যবাদিতা কল্যাণের পথ দেখায়, কল্যাণ জান্নাতের পথ দেখায়। এক ব্যক্তি সত্য বলতে থাকে, এক পর্যায়ে সে আল্লাহর কাছে সত্যবাদী হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি।

উত্তর: মিথ্যা, যা বাস্তবতার বিপরীত। যার মধ্যে রয়েছে: মানুষের সাথে মিথ্যা বলা, ওয়াদাকৃত বিষয়ের খেলাফ করা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
وإنَّ الكذِبَ يَهْدي إلى الفُجورِ، وإنَّ الفُجورَ يَهْدي إلى النَّارِ، وإنَّ الرَّجلَ لَيَكذِبُ حتَّى يُكتَبَ عندَ اللهِ كذَّابًا “নিশ্চয় মিথ্যা পাপাচারের পথ দেখায়, পাপাচার (জাহান্নামের) আগুনের পথ দেখায়। একজন ব্যক্তি মিথ্যা বলতে থাকে, যতক্ষণ না সে আল্লাহর কাছে মিথ্যুক হিসেবে পরিগণিত হয়ে থাকে।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন: “মুনাফিকের আলামত তিনটি” যার মধ্যে তিনি উল্লেখ করেছেন: «إذا حدَّثَ كَذَبَ، وإذا وَعَدَ أَخلَفَ» “যখন সে কথা বলে, তখন মিথ্যা বলে, আর ওয়াদা করলে তার খেলাফ করে।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি।

উত্তর: - আল্লাহ তা‘আলার আনুগত্যের উপরে সবর করা।
- পাপাচার থেকে সবর করা।
- তাকদীরের নির্ধারিত কষ্টের উপরে সবর করা, আর সকল অবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা করা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَٱللَّهُ يُحِبُّ ٱلصَّـبِرِينَ “আর আল্লাহ সবরকারীদেরকে পছন্দ করেন।” [সূরা আলে-ইমরান: ১৪৬] নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন: عجَبًا لأمْرِ المؤمنِ إنَّ أمْرَه كلَّهُ خيرٌ، وليس ذلك لأحدٍ إلَّا للمؤمنِ؛ إنْ أصابَتْهُ سَرَّاءُ شكَرَ فكان خيرًا له، وإنْ أصابَتْهُ ضَرَّاءُ صبَرَ فكان خيرًا له “মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক। তার প্রতিটি কাজই তার জন্য ভালো। এটা মু’মিন ব্যতীত অন্য কারো জন্য নয়। যদি তাকে কল্যাণ স্পর্শ করে সে আল্লাহর শোকর আদায় করে। ফলে এটা তার জন্য মঙ্গলময় হয়। আর যদি তাকে ক্ষতি স্পর্শ করে সে ধৈর্য ধারণ করে। ফলে এটাও তার জন্য মঙ্গলময় হয়।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: এর বিপরীত হচ্ছে- আল্লাহর আনুগত্যের ব্যাপারে সবর না করা, পাপাচার থেকে বিরত থেকে সবর না করা এবং কথা ও কাজের মাধ্যমে তাকদীরের ব্যাপারে অসন্তুষ্ট হওয়া।
সবরের কতিপয় সূরত হচ্ছে:

* মৃত্যু কামনা করা।
* গালে আঘাত করা।
* কাপড়-চোপড় ছিড়ে ফেলা।
* চুল এলোমেলো করে রাখা।
* নিজের ধংসের জন্য দু‘আ করা।
নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন:
الْجَزَاءِ مَعَ عِظَمِ الْبَلَاءِ وَإِنَّ اللَّهَ إِذَا أَحَبَّ قَوْمًا ابْتَلَاهُمْ، فَمَنْ رَضِيَ فَلَهُ الرِّضَا، وَمَنْ سَخِطَ فَلَهُ السَّخَطُ “বিপদের কাঠিন্যতার সাথে পুরষ্কার আসে। আর নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা কোন জাতীকে ভালবাসলে, তাদের উপরে বিপদ দিয়ে থাকেন। যে ব্যক্তি তাতে সন্তুষ্ট থাকতে পারে, তার জন্য থাকে (আল্লাহর) সন্তুষ্টি। আর যে ব্যক্তি তাতে অসন্তুষ্ট হয়, তার জন্য থাকে (আল্লাহর) অসন্তুষ্টি। এটি তিরমিযী ও ইবন মাজাহ বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: মানুষেরা নিজেদের মধ্যে একে অপরকে উত্তম ও কল্যাণের ব্যাপারে সহযোগিতা করা।
সহযোগিতার সূরতসমূহ:
- অধিকার বণ্টনে সহযোগিতা করা।
- জালিমের অত্যাচার রোধে সহযোগিতা করা।
- মিসকীন ও সাধারণ মানুষের প্রয়োজনসমূহ পূরণে সহযোগিতা করা।
- প্রতিটি ভালো কাজে সহযোগিতা করা।
- কাউকে কষ্ট দেওয়া, পাপাচার এবং সীমালঙ্ঘনে কারো সহযোগিতা না করা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ “তোমরা নেককাজ এবং তাকওয়ার ব্যাপারে পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য কর। তবে সীমা লঙ্ঘন পাপাচারের ক্ষেত্রে একে অপরকে সাহায্য করো না।” [সূরা আল-মায়েদা: ০২] নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন: المُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ كالْبُنْيانِ؛ يَشُدُّ بَعْضُه بَعْضًا “মুমিন অন্য মুমিনের জন্য একটি ইমারতের মত, যার একটি অংশ অন্য অংশকে দৃঢ়তা দান করে।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন: المُسْلِمُ أَخُو المُسْلِمِ، لا يَظلِمُه، ولا يُسْلِمُه، ومَن كان في حاجةِ أَخِيهِ، كان اللهُ في حاجَتِه، ومَن فَرَّجَ عن مُسْلِمٍ كُرْبَةً، فَرَّجَ اللهُ عَنهُ كُرْبَةً مِن كُرُباتِ يَومِ القِيامةِ، ومَن سَتَرَ مُسْلِمًا، سَتَرَهُ اللهُ يَومَ القِيامةِ “এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। সে তার উপর জুলুম করবে না এবং তাকে যালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে কেউ তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে,আল্লাহ তার অভাব পূরণ করবেন। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের বিপদ দুর করবে, আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামাতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি।

উত্তর: ০১- আল্লাহর থেকে লজ্জা: আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার নাফারমানী না করার মাধ্যমে লজ্জা করা।
০২- মানুষ থেকে লজ্জা: যার মধ্যে রয়েছে- অশ্লীল আলাপ, বাজে কথা ও গোপনস্থান উন্মুক্ত করা পরিত্যাগ করা।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
«الإِيمانُ بِضْعٌ وسَبعونَ» - أو: «بِضْعٌ وسِتُّونَ» - «شُعْبةً، أَعْلَاها: قَوْلُ: لا إِلَهَ إلَّا اللهُ. وأَدْناها: إِماطةُ الأَذَى عنِ الطَّريقِ. والحَياءُ شُعْبةٌ مِنَ الإِيمانِ» “ঈমানের সত্তর অথবা ষাটের বেশি শাখা রয়েছে। তার মধ্যে সর্বোত্তম (শাখা) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা এবং সর্বনিম্ন (শাখা) রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস (পাথর কাঁটা ইত্যাদি) দূরীভূত করা। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: - বড়দের প্রতি রহমত করা, তথা: তাদের সম্মান করা।
- শিশু ও বয়সে ছোটদের প্রতি রহমত করা।
- অভাবী, ফকীর ও মিসকীনদের প্রতি রহমত করা।
- পশুদের খাবার দেওয়া ও তাদেরকে কষ্ট না দিয়ে রহমত করা।
যার ব্যাপারে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা:
تَرَى المُؤْمِنينَ في تَراحُمِهِم وتَوادِّهِم وتَعاطُفِهِم كمَثَلِ الجَسَدِ، إذا اشتَكَى عُضْوٌ تَداعَى لهُ سائِرُ جَسَدِهِ بالسَّهَرِ والحُمَّى “পারস্পরিক দয়া, ভালোবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে মুমিনদের উদাহরণ একটি দেহের মতো। যখন শরীরের একটি অঙ্গ রোগাক্রান্ত হয়, তখন শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অনিদ্রা এবং জ্বরে অংশ নেয়।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: الرَّاحِمونَ يَرحَمُهُمُ الرَّحمنُ، ارْحَمُوا أهْلَ الأَرضِ، يَرحَمُكُمْ مَن في السَّماءِ “রহমান দয়াশীলদের প্রতি দয়া করেন। তোমরা জমিনবাসীদের প্রতি দয়া কর, আসমানের অধিবাসী তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।” এটি আবূ দাঊদ ও তিরমিযী বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: আল্লাহ তা‘আলার ভালোবাসা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: وَالَّذِينَ آَمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ “পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১৬৫]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসা।
তিনি বলেছেন: والَّذي نَفْسي بِيَدِه، لا يُؤمِنُ أحدُكم حتَّى أكونَ أحبَّ إليهِ مِن والِدِه ووَلَدِه ‘‘তোমাদের মথ্যে ততক্ষণ পর্যন্ত কেউ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা এবং সমস্ত মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই।’’ এটি বুখারী বর্ণনা করেছেন।
মুমিনদেরকে ভালোবাসা এবং তাদের কল্যাণকে পছন্দ করা, যেভাবে তুমি নিজের কল্যাণ পছন্দ করে থাক।
নবী আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেছেন:
لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ “তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে।” এটি বুখারী বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: মানুষের সাথে সাক্ষাতের সময়ে মুখে হাঁসি-খুশি ভাব, আনন্দ, মুচকি হাঁসি, কোমলতা এবং প্রফুল্লতা প্রকাশ করা।
এটি মানুষকে বিরক্তকারী তাদের মুখের উপরে এ জাতীয় ভ্রূকুটি না করার মাধ্যমে।
এর ফযীলতের ব্যাপারে হাদীসের মধ্যে এসেছে, আবু যার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, আমাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: لا تَحْقِرَنَّ مِنَ المَعرُوفِ شَيْئًا، ولو أَنْ تَلْقَى أخاكَ بِوَجْهٍ طَلْقٍ “তুমি পুণ্যের কোনো কাজকে তুচ্ছ মনে করো না। যদিও সেটি তোমার (মুসলিম) ভাইয়ের সঙ্গে হাঁসিমুখে সাক্ষাত করা হয়।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: تَبَسُّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ لَكَ صَدَقَةٌ “তোমার ভাইয়ের সামনে মুচকি হাসি দেওয়া তোমার জন্য সাদকা।“ এটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: অন্য কোন ব্যক্তির উপরে থাকা নি‘আমাতের বিলুপ্তি কামনা করা অথবা অন্য কোন ব্যক্তির কাছে নি‘আমাত থাকাকে অপছন্দ করা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ “আর প্রতিটি হিংসুক থেকে, যখন সে হিংসা করে।” [সূরা আল-ফালাক: ০৫]
আনাস ইবনু মালিক রদিয়াল্লাহু ‘আনহু সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: لا تَباغَضُوا، ولا تَحاسَدُوا، ولا تَدابَرُوا، وكُونوا -عِبادَ اللهِ- إخوانًا “তোমরা পরষ্পরে শত্রুতা করবে না, হিংসা করবে না, কারো পিছনে লেগে থাকবে না। বরং আল্লাহর বান্দা হিসেবে পরষ্পর ভাই হয়ে থাকবে।” এটি বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: এটি হচ্ছে- তোমার কোন মুসলিম ভাইকে নিয়ে হাঁসি-তামাশা করা এবং তাকে তুচ্ছ জ্ঞান করা। আর এটি বৈধ নয়।
এ ব্যাপারে নিষেধ করে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَومٌ مِنْ قَوْمٍ عَسَى أَنْ يَكُونُوا خَيْرًا مِنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِنْ نِسَاءٍ عَسَى أَنْ يَكُنَّ خَيْرًا مِنْهُنَّ وَلَا تَلْمِزُوا أَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ وَمَنْ لَمْ يَتُبْ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ “হে ঈমানদারগণ ! কোন মুমিন সম্প্রদায় যেন অপর কোন মুমিন সম্প্রদায়কে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে এবং নারীরা যেন অন্য নারীদেরকে উপহাস না করে; কেননা যাদেরকে উপহাস করা হচ্ছে তারা উপহাসকারিণীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে। আর তোমরা একে অন্যের প্ৰতি দোষারোপ করো না এবং তোমরা একে অন্যকে মন্দ নামে ডেকো না; ঈমানের পর মন্দ নাম অতি নিকৃষ্ট। আর যারা তাওবা করে না তারাই তো যালিম।” [সূরা আল-হুজুরাত: ১১]

উত্তর: এটি হচ্ছে- মানুষ নিজেকে অন্যের উপরে শ্রেষ্ট ভাববে না, যার ফলে সে মানুষকে তাচ্ছিল্যও করবে না এবং সত্যকে প্রত্যাখ্যান করবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
وَعِبَادُ الرَّحْمَنِ الَّذِينَ يَمْشُونَ عَلَى الْأَرْضِ هَوْنًا “আর রহমানের বান্দা, যারা যমীনের উপরে ধীরে সুস্থে চলাফেরা করে।” [সূরা আল-ফুরকান: ৬৩] তথা: নম্রতা সহকারে বিনয়ী হয়ে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: وما تَواضَعَ أحَدٌ للهِ إلَّا رَفَعَهُ اللهُ “যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয় অবলম্বন করবে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: إنَّ اللهَ أَوْحى إليَّ أنْ تَواضَعُوا، حتَّى لا يَفخَرَ أحَدٌ على أحَدٍ، ولا يَبْغيَ أحَدٌ على أحَدٍ “আল্লাহ তা‘আলা আমার নিকট অহী পাঠিয়েছেন যে, তোমরা পরষ্পর বিনয়ী হও, যেন কেউ কারো উপরে অহংকার না করে এবং সীমালঙ্ঘনও না করে।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: ০১- সত্যের উপরে অহংকার প্রকাশ, এটি হচ্ছে: সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা এবং তা গ্রহণ না করা।
০২- মানুষের উপরে অহংকার প্রকাশ, এটি হচ্ছে: তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা এবং তাদেরকে অপমানিত করা।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لا يَدخُلُ الجَنَّةَ مَن كان في قَلبِه مِثْقالُ ذَرَّةٍ مِن كِبْرٍ “যার অন্তরে অণু পরিমাণও অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” فقال رَجُلٌ: إنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أن يَكونَ ثَوبُه حسَنًا، ونَعْلُه حسَنةً؟ قال: “তখন একজন বললেন: নিশ্চয় একজন মানুষ চায় যে, তার কাপড়টি সুন্দর হোক, তার জুতাটি সুন্দর হোক। তখন তিনি বললেন: إنَّ اللهَ جَميلٌ يُحِبُّ الجَمالَ، الكِبْرُ: بَطَرُ الحَقِّ، وَغَمْطُ النَّاسِ “নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর, এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার হচ্ছে: সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা এবং মানুষকে তাচ্ছিল্য করা।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
- بَطَرُ الحَقِّ শব্দের অর্থ: সত্য বা হক প্রত্যাখ্যান করা।
- غَمْطُ النَّاسِ শব্দের অর্থ: তাদেরকে তাচ্ছিল্য করা।
- সুন্দর কাপড় বা জুতা অহংকার নয়।

উত্তর: - কেনাবেচার মধ্যে ধোকাবাজি, আর তা হচ্ছে: পণ্যের দোষ গোপন করা।
- জ্ঞান অর্জনে ধোকাবাজি, যেমন: শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করা।
- কথার মধ্যে ধোকাবাজি, যেমন: মিথ্যা ও প্রতারণামূলক সাক্ষ্য দেওয়া।
- তুমি যা বলেছ অথবা মানুষের সাথে একমত হয়ে চুক্তি করেছ, এমন বিষয় পূর্ণ না করা।
ধোঁকা দেওয়া থেকে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত একটি হাদীস রয়েছে:
.
أنَّ رسولَ اللهِ ﷺ مرَّ على صُبْرةِ طعامٍ، فأَدخَلَ يدَه فيها، فنالَتْ أصابعُه بَلَلًا، فقال: «ما هذا يا صاحِبَ الطَّعامِ؟» قال: أصابَتْهُ السَّماءُ يا رسولَ اللهِ. قال: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন একটি খাদ্য শস্যের স্তুপের পাশ দিয়ে পথ অতিক্রম করলেন। তিনি স্তুপের ভেতর হাত প্রবেশ করালে তার হাতের আঙ্গুলগুলো ভিজে গেল। তিনি বললেন: হে স্তুপের মালিক! এ কি ব্যাপার? লোকটি বলল: হে আল্লাহর রাসূল! এতে বৃষ্টির পানি লেগেছে। তিনি বললেন: «أفلا جَعَلْتَه فَوقَ الطَّعامِ كَيْ يَراهُ النَّاسُ؟ مَن غَشَّ فليس مِنِّي» “সেগুলো তুমি স্তুপের ওপরে রাখলে না কেন? তাহলে লোকেরা দেখে নিতে পারতো। জেনে রাখো, যে ব্যক্তি ধোকাবাজি করে, আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
الصُّبْرَة শব্দের অর্থ: খাদ্য-শস্যের স্তুপ।

উত্তর: অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় কোন মুসলিম ভাইয়ের এমন ত্রুটি উল্লেখ করা, যা সে অপছন্দ করে।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ “এবং একে অন্যের গীবত করবে না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে কর। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ্ তওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।” [সূরা আল-হুজুরাত: ১২]

উত্তর: ঝগড়া বাধানোর নিমিত্তে মানুষের মধ্যে কথা ছড়িয়ে দেওয়া।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: «لا يَدخُلُ الجَنَّةَ نَمَّامٌ» “চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: কল্যাণকর কাজ এবং মানুষের উপরে যা করা আবশ্যক তা পালনে ঢিলেমি করা।
এর মধ্যে অন্যতম: ফরযসমূহ পালনে অলসতা করা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: إِنَّ الْمُنَافِقِينَ يُخَادِعُونَ اللَّهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ وَإِذَا قَامُوا إِلَى الصَّلَاةِ قَامُوا كُسَالَى يُرَاءُونَ النَّاسَ وَلَا يَذْكُرُونَ اللَّهَ إِلَّا قَلِيلً “নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়। আর তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন। আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন অলসভাবে দাঁড়ায়, তারা লোকদেরকে দেখায় এবং তারা আল্লাহকে কমই স্মরণ করে।” [সূরা আন-নিসা: ১৪২]
সুতরাং মুমিনের উচিত অলসতা, দূর্বলতা ও বসে থাকার মনোভাব ত্যাগ করা, আর আল্লাহ তা‘আলা সন্তুষ্ট হন এমন কাজে, আন্দোলনে, চেষ্টা-প্রচেষ্টা এবং শ্রমদানে প্রবৃত্ত হওয়া।

উত্তর: ০১- প্রশংসিত রাগ: এটি হচ্ছে- আল্লাহর জন্য রাগ, যখন কাফির, মুনাফিক অথবা অন্যান্যরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার সম্মান নষ্ট করে।
০২- নিন্দনীয় রাগ: এটি হচ্ছে এমন রাগ, যা মানুষকে এমন কাজ ও কথার প্রতি ধাবিত করে, যা তার জন্য শোভা পায় না।
নিন্দনীয় রাগের চিকিৎসা:

অযু করা।
দাঁড়িয়ে থাকলে বসে পড়া, বসে থাকলে শুয়ে পড়া।
أن يَلتزِمَ بوصيَّةِ النَّبيِّ ﷺ في ذلك:
«لا تَغضَبْ». “তুমি রাগ করবে না” নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ কথাটিকে সর্বদা অনুশীলন করা।
অন্তরকে রাগান্বিত হওয়ার দিকে ধাবিত হওয়ার সময়ে নিয়ন্ত্রন করবে।
বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইতে হবে।
চুপ থাকতে হবে।

উত্তর: মানুষের দোষ-ত্রুটি এবং গোপনীয়তা খুঁজে বেড়ানো এবং তা প্রকাশ করে দেওয়া।
এর হারাম সূরত হচ্ছে:

- মানুষের ঘরে তাদের গোপন বিষয় অনুসন্ধান করা।
- কোন দল বা ব্যক্তি বিশেষের কথা তাদের অজ্ঞাতসারে (আঁড়ি পেতে) শোনা।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: وَلَا تَجَسَّسُوا ... “তোমরা গোয়েন্দাগিরি করো না...” [সূরা আল-হুজুরাত: ১২]

উত্তর: - অপচয়: কোন সম্পদকে তার ন্যায্য খাতের বাইরে ব্যয় করা।
এর সম্পূর্ণ বিপরীত হচ্ছে কৃপণতা: এটি হচ্ছে- সম্পদকে তার ন্যায্য খাতে ব্যায় না করে গচ্ছিত রাখা।
সঠিক পন্থা হচ্ছে উধার পন্থা, আর মুসলিম হবে সম্মানী।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
وَٱلَّذِينَ إِذَاۤ أَنفَقُوا لَمۡ يُسۡرِفُوا وَلَمۡ يَقۡتُرُوا وَكَانَ بَيۡنَ ذَ لِكَ قَوَامًا “এবং যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, কৃপনতাও করে না, আর তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী।” [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ৬৭]

উত্তর: কাপুরুষতা: ভয় পাওয়া উচিত নয়, এমন বিষয়ে ভয় পাওয়া।
যেমন:
সত্য বলা অথবা অন্যায়কে অস্বীকার করতে ভয় পাওয়া।
সাহসিকতা: সত্যের উপরে অগ্রসর হওয়া। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে: জিহাদের ময়দানে এবং ইসলাম ও মুসলিমদেরকে রক্ষা করার জন্য অগ্রসর হওয়া।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দু‘আর মধ্যে বলতেন: اللَّهُمَّ إنِّي أعوذُ بكَ من الجُبنِ “হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: المؤمنُ القويُّ خيرٌ وأحبُّ إلى اللهِ مِن المؤمنِ الضَّعيفِ، وفي كُلٍّ خيرٌ “দূর্বল মুমিন অপেক্ষা শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে অধিকতর প্রিয় এবং উত্তম, তবে সবার মধ্যেই কল্যাণ রয়েছে।” এটি সহীহ মুসলিম বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: যেমন: - অভিশাপ দেওয়া এবং গালি দেওয়া।
- কোন মানুষ কর্তৃক (অন্যকে) “জানোয়ার” বা অনুরূপ কোন কথা বলা।
- অথবা কোন অশ্লীল ও নির্লজ্জ কথা উল্লেখ করা।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এগুলোর প্রত্যেকটি থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন:
ليس المؤْمِنُ بالطَّعَّانِ، ولا اللَّعَّانِ، ولا الفاحِشِ، ولا البَذيءِ “মুমীন খোঁটা দানকারী, অভিশাপ-কারী, নির্লজ্জ ও অশ্লীল-ভাষী হয় না।”
এটি তিরমিযী ও ইবনু হিব্বান বর্ণনা করেছেন।

উত্তর: ০১- এ মর্মে দু‘আ করা যেন আল্লাহ তোমাকে উত্তম চরিত্র দান করেন এবং এ ব্যাপারে তোমাকে সহযোগিতা করেন।
০২- আল্লাহ তা‘আলার তত্ত্বাবধানের খেয়াল রাখা, এবং (এ চিন্তা করা) তিনি তোমাকে জানেন, দেখেন এবং তোমার কথা শুনেন।
০৩- উত্তম চরিত্রের সওয়াব স্মরণ করা, এটি জান্নাতে প্রবেশের কারণ।
০৪- খারাপ চরিত্রের পরিণতি সম্পর্কে স্মরণ করা, এটি জাহান্নামে প্রবেশের কারণ।
০৫- উত্তম চরিত্রের কারণে আল্লাহর মুহাব্বাত এবং তাঁর সৃষ্টির মুহাব্বাত অর্জিত হয়। অনুরূপ খারাপ বা মন্দ চরিত্রের কারণে আল্লাহর অসন্তুষ্টি এবং তাঁর সৃষ্টির অসন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
০৬- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত অধ্যয়ন এবং তার অনুসরণ করা।
০৭- উত্তম মানুষদের সঙ্গ গ্রহণ করা এবং মন্দ মানুষদের সঙ্গ থেকে দূরে থাকা।