দু‘আ ও যিকিরসমগ্র অংশ
উত্তর: اللهم لك الحمد أنت كسوتنيه، أسألك خيره وخير ما صنع له، وأعوذ بك من شره وشر ما صنع له “হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা আপনার। এটি আপনি আমাকে পরিয়েছেন। আমি আপনার নিকটে এর মধ্যে নিহিত কল্যাণ এবং যে উদ্দেশ্যে এটা বানানো হয়েছে তার কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর এর মধ্যে নিহিত ক্ষতি এবং যে উদ্দেশ্যে এটা বানানো হয়েছে তার অকল্যাণ হতে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।” এটি আবূ দাঊদ ও তিরমিযী বর্ণনা করেছেন।
উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপরে দরুদ পাঠ করবে। এটি মুসলিম বর্ণনা করেছেন। আরো বলব: اللهم رب هذه الدعوة التامة، والصلاة القـائـمـة، آت محـمـدًا الـوسـيلة والفـضـيلـة، وابـعثه مقامًا محمودًا الذي وعدته “হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত সালাতের রব! আপনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নৈকট্য ও মর্যাদা দান করুন এবং তাকে আপনার ওয়াদাকৃত প্রশংসিত স্থানে পৌঁছিয়ে দিন।" সহীহ বুখারী।
আযান ও ইকামাতের মাঝখানে দু‘আ করব; কেননা এই দু‘আ ফেরত দেওয়া হয় না।
উত্তর: ০১- আয়াতুল কুরসী পড়ব: اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ “আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সুপ্রতিষ্ঠিত ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করে না। তাঁর জন্যই আসমানসমূহে যা রয়েছে তা এবং যমীনে যা আছে তা। কে সে, যে তাঁর নিকট সুপারিশ করবে তাঁর অনুমতি ছাড়া? তিনি জানেন যা আছে তাদের সামনে এবং যা আছে তাদের পেছনে। আর তারা তাঁর জ্ঞানের সামান্য পরিমাণও আয়ত্ব করতে পারে না, তবে তিনি যা চান তা ছাড়া। তাঁর কুরসী আসমানসমূহ ও যমীন পরিব্যাপ্ত করে আছে এবং এ দু’টোর সংরক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ, মহান।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২৫৫] ০২- আরো পড়ব: بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ রহমান রহীম আল্লাহর নামে শুরু করছি। قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ “বলুন, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়, (১) اللَّهُ الصَّمَدُ আল্লাহ হচ্ছেন সামাদ (তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী); (২) لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ তিনি কাউকেও জন্ম দেননি এবং তাকেও জন্ম দেয়া হয়নি, (৩) وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ এবং তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।” (৪) তিনবার। بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ রহমান ও রহীম আল্লাহর নামে। قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ “বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের (১) مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে, (২) وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ আর অনিষ্ট হতে রাতের অন্ধকারের, যখন তা গভীর হয়, (৩) وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ আর অনিষ্ট হতে সমস্ত নারীদের, যারা গিরায় ফুক দেয়, (৪) وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ আর অনিষ্ট হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।” (৫) তিনবার। بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ রহমান ও রহীম আল্লাহর নামে। قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ “বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের, (১) مَلِكِ النَّاسِ মানুষের অধিপতির, (২) إِلَهِ النَّاسِ মানুষের ইলাহের কাছে, (৩) مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হতে, (৪) الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, (৫) مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে।” (৬) তিনবার। ০৩- اللهم أنت ربي لا إله إلا أنت، خلقتني وأنا عبدك، وأنا على عهدك ووعدك ما استطعت، أعوذ بك من شر ما صنعت، أبوء لك بنعمتك علي، وأبوء بذنبي، فاغفر لي، فإنه لا يغفر الذنوب إلا أنت “হে আল্লাহ! আপনি আমার রব। আপনি ছাড়া আর কোন সত্য উপাস্য নেই। আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমি আপনার বান্দা। আমি আপনার প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের উপর যথাসাধ্য প্রতিষ্ঠিত আছি। আমি যা করেছি তার মন্দ থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। আমার উপর আপনার যে নি‘আমাত রয়েছে তা আমি স্বীকার করছি এবং আমার অপরাধও আমি স্বীকার করছি। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করেন। আপনি ছাড়া আর কেউ পাপ মার্জনা করার নাই।” এটি বুখারী বর্ণনা করেছেন।
উত্তর: سُبْحانَكَ اللَّهُمَّ وبِحَمْدِكَ، أشْهَدُ أنْ لا إلهَ إِلاَّ أنْتَ، أسْتَغْفِرُكَ وأتُوبُ إِلَيْكَ “হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র এবং সমস্ত প্রশংসা আপনার জন্য। আমি সাক্ষ্য দেই যে, আপনি ব্যতীত আর কোন মা‘বূদ নেই, আপনার কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আপনি দিকেই প্রত্যাবর্তন করি’।” এটি আবূ দাউদ, তিরমিযী ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন।
উত্তর: بسم الله، والحمد لله ﴿سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ 13 وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ 14﴾، «الحمد لله، الحمد لله، الحمد لله، الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، سبحانك اللهم إني ظلمت نفسي فاغفر لي؛ فإنه لا يغفر الذنوب إلا أنت» “আল্লাহর নামে শুরু করছি, সকল প্রশংসা আল্লাহরই। সুমহান পবিত্র সত্তা তিনি, যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, আর আমরা সমর্থ ছিলাম না এদেরকে বশীভূত করতে। আর আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের রবের কাছে ফিরে যেতে হবে। সকল প্রশংসা আল্লাহরই। সকল প্রশংসা আল্লাহরই। সকল প্রশংসা আল্লাহরই। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। হে সুমহান সত্তা আল্লাহ, নিশ্চয় আমি আমার উপরে জুলুম করে ফেলেছি, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করুন; যেহেতু আপনি ব্যতীত আর কেউই পাপ ক্ষমা করতে পারে না।” এটি আবূ দাঊদ ও তিরমিযী বর্ণনা করেছেন।
উত্তর: «الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر ﴿سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ 13 وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ 14﴾، اللهم إنا نسألك في سفرنا هذا البر والتقوى ومن العمل ما ترضى، اللهم هون علينا سفرنا هذا، واطو عنا بعده، اللهم أنت الصاحب في السفر، والخليفة في الأهل، اللهم إني أعوذ بك من وعثاء السفر، وكآبة المنظر، وسوء المنقلب، في المال والأهل» "আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সুমহান পবিত্র সত্তা তিনি, যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন, আর আমরা সমর্থ ছিলাম না এদেরকে বশীভূত করতে। আর আমাদেরকে অবশ্যই আমাদের রবের কাছে ফিরে যেতে হবে। হে আল্লাহ! আমাদের এই সফরে আমরা আপনার নিকটে কল্যাণ, তাকওয়া এবং আপনি সন্তুষ্ট হন এমন কাজের তাওফীক চাচ্ছি। হে আল্লাহ! আমাদের এই সফর আমাদের জন্য সহজ করে দিন এবং এর দুরত্ব কমিয়ে দিন। হে আল্লাহ! আপনিই সফরসঙ্গী এবং পরিবারের দায়িত্বশীল। হে আল্লাহ! আপনার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করি সফরের কষ্ট, দুঃখজনক দৃশ্য এবং ফিরে এসে পরিবার ও ধন-সম্পদের ক্ষতিকর পরিবর্তন থেকে।"
সফর থেকে ফিরে এসে এ কথার সাথে বৃদ্ধি করে বলবে:
آيبون، تائبون، عابدون، لربنا حامدون “(আমরা) প্রত্যাবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী এবং আমাদের রবের প্রশংসাকারী।” এটি সহীহ মুসলিম বর্ণনা করেছেন।
উত্তর: لا إله إلا الله وحده لا شريك له، له الملك، وله الحمد، يحيي ويميت، وهو حي لا يموت، بيده الخير، وهو على كل شيء قدير “আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসাও তাঁর। তিনিই জীবন দান করেন, তিনিই মৃত্যু দেন। তিনি চিরঞ্জীব, যিনি কখনো মৃত্যুবরণ করবেন না। তাঁর হাতেই সমগ্র কল্যাণ। আর তিনি প্রতিটি বস্তুর উপরেই ক্ষমতাবান।” এটি তিরমিযী ও ইবন মাজাহ বর্ণনা করেছেন।
উত্তর: মুসলিম ব্যক্তি বলবে: السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ “আপনার উপরে আল্লাহর পক্ষ থেকে শান্তি, রহমত ও তাঁর বরকত নাযিল হোক।”
তার জবাবে তার ভাই বলবে: وَعَلَيْكُمُ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ “আপনার উপরেও আল্লাহর পক্ষ থেকে শান্তি, রহমত ও তাঁর বরকত নাযিল হোক।” এটি তিরমিযী, আবূ দাউদ ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন।
উত্তর: হাদীসে এসেছে: إذا رأى أحدكم من أخيه أو من نفسه، أو من ماله ما يعجبه، [فليدع له بالبركة] فإن العين حق “তোমাদের কেউ যখন তার ভাইয়ের কাছে, অথবা নিজের কাছে অথবা তার সম্পদে এমন কিছু দেখতে পায়, যা তার কাছে পছন্দনীয় হয় [সে যেন তার জন্য বরকতের দু‘আ করে], কেননা নজর লাগা সত্য।” এটি আহমাদ, ইবন মাজাহ ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন।
اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদের উপর এবং মুহাম্মাদের বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম ও ইবরাহীমের বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদের উপর এবং মুহাম্মাদের বংশধরদের উপর বরকত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম ও ইবরাহীমের বংশধরদের উপর বরকত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী।” মুত্তাফাকুন ‘আলাইহি।