সীরাতে নববী (নবীর জীবনচরিত) অংশ

তিনি হচ্ছেন মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল্লাহ ইবনু আব্দিল মুত্তালিব ইবনু হাশিম, আর হাশিম ছিলেন কুরাইশের মধ্য হতে, কুরাইশ আরবদের মধ্য হতে আর আরব ইবরাহীম খলীলের পুত্র ইসমাঈলের বংশধর। তার উপরে এবং আমাদের নবীর উপরে আল্লাহর সর্বোত্তম সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক।

উত্তর: তিনি গর্ভে থাকা অবস্থায় তার জন্ম গ্রহণের আগেই তার পিতা মদীনাতে মারা যান।

উত্তর: হস্তির বছরে, রবীউল আওয়াল মাসের সোমবারে।

উত্তর: তার পিতার মুক্ত দাসী উম্মু আয়মান,
তার চাচা আবু লাহাবের মুক্ত দাসী ছুওয়াইবাহ
এবং হালীমাহ আস-সা‘দিয়্যাহ।

উত্তর: তার বয়স যখন ছয় বছর, তখন তার মা মারা যান। অতপর তার দাদা আব্দুল মুত্তালিব তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

উত্তর: তার বয়স যখন আট বছর, তখন তার দাদা আব্দুল মুত্তালিব মারা যান। আর তখন তার চাচা আবু ত্বালিব তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

উত্তর: তিনি তার চাচার সাথে শামে (সিরিয়াতে) সফর করেছিলেন, যখন তার বয়স বারো বছর।

উত্তর: খাদীজা রদিয়াল্লাহু আনহার বানিজ্যিক সম্পদ নিয়ে তিনি সেখানে দ্বিতীয়বার সফর করেন। সেখান থেকে ফেরার পরেই তিনি খাদীজা রদিয়াল্লাহু আনহাকে বিবাহ করেন। তখন তার বয়স ছিল পঁচিশ বছর।

উত্তর: কুরাইশরা কা‘বা গৃহকে পুনরায় নির্মাণ করেছিল, যখন তার বয়স পয়ত্রিশ বছর ছিল।
এ সময়ে হাজারে আসওয়াদ স্থাপন করা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ হলে কুরাইশরা তাকে সালিশ মেনেছিল। তখন তিনি এটিকে একটি কাপড়ের মধ্যে রেখে, কুরাইশদের সকল গোত্রকে উক্ত কাপড়ের কোনা ধরতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর তারাও মোট চারটি গোত্রে বিভক্ত ছিল। যখন তারা কাপড় ধরে সেটিকে উঁচু করল, তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে হাতে সেটিকে যথার্থ স্থানে স্থাপন করেন।

উত্তর: তার বয়স তখন চল্লিশ বছর ছিল। তিনি সকল মানুষের কাছে সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন।

উত্তর: সত্য স্বপ্ন, তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন, তা সকালের মতই প্রতিফলিত হত।

উত্তর: তিনি খাদ্য সামগ্রী নিয়ে হেরা গুহাতে যেয়ে আল্লাহর ইবাদাত করতেন।
আর এরপরে তার কাছে অহী নাযিল হয়, তখনও তিনি গুহার মধ্যে ইবাদাত করছিলেন।

উত্তর: আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন: ٱقۡرَأۡ بِٱسۡمِ رَبِّكَ ٱلَّذِي خَلَقَ “পড়ুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন (১)–” خَلَقَ ٱلۡإِنسَـنَ مِنۡ عَلَقٍ “সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাটবদ্ধ রক্ত হতে (২) ٱقۡرَأۡ وَرَبُّكَ ٱلۡأَكۡرَمُ 3 “পড়ুন, আর আপনার রব মহামহিমান্বিত। (৩) ٱلَّذِي عَلَّمَ بِٱلۡقَلَمِ 4 “যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। (৪) عَلَّمَ ٱلۡإِنسَـنَ مَا لَمۡ يَعۡلَمۡ 5 “শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। (৫) [সূরা আল-‘আলাক: ১-৫]

উত্তর: পুরুষদের মধ্য হতে: আবূূূূূূূূূূূ বাকর, নারীদের মধ্য হতে: খাদীজাহ বিনতু খুওয়াইলিদ, বালকদের মধ্য হতে: আলী ইবনু আবী ত্বালিব, মুক্তদাসদের মধ্য হতে: যাইদ ইবনু হারিছাহ, দাসদের মধ্য হতে: বিলাল হাবশী রদিয়াল্লাহু আনহুম আজমা‘ঈন সহ আরো অনেকে।

উত্তর: প্রায় তিন বছর পর্যন্ত দাও‘আত গোপনীয় ছিল। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রকাশ্যে দাও‘আত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

উত্তর: তাকে এবং মুসলিমদের উপরে অত্যাচারের ব্যাপারে মুশরিকরা অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করেছিল; এমনকি এ কারণে তিনি মুমিনদেরকে হাবশাতে নাজাশীর কাছে হিজরতের আদেশ দিয়েছিলেন।
মুশরিকরা তাকে কষ্ট দেওয়া ও হত্যা করার ব্যাপারে একমত হয়েছিল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে রক্ষা করলেন এবং তার চাচা আবু ত্বালিবের মাধ্যমে তাকে নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঘিরে রাখলেন; যাতে করে তিনি তাকে নিরাপদ রাখতে পারেন।

উত্তর: তার চাচা আবু ত্বালিব ও তার স্ত্রী খাদীজাহ রদিয়াল্লাহু আনহা মারা যান।

উত্তর: যখন রাসূলের বয়স পঞ্চাশ বছর ছিল এবং তখন তার উপরে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করা হয়।
ইসরা: মাসজিদে হারাম থেকে মাসজিদে আকসা পর্যন্ত (রাতে ভ্রমন করা)
মি‘রাজ: মাসজিদে আকসা থেকে আসমান, (সেখান থেকে) সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত।

উত্তর: তিনি তায়েফের অধিবাসীদের কাছে দাও‘আত দিতেন এবং মানুষের একত্রিত হওয়ার স্থান ও বিভিন্ন মওসুমে তিনি নিজেকে (দা‘ঈ হিসেবে) পেশ করতেন। এভাবে একদিন মদীনার আনসারগণ আসলেন, এরপরে তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপরে ঈমান আনলেন আর তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করার ব্যাপারে বাই‘আত গ্রহণ করেন।

উত্তর: (মদীনাতে) তার উপরে যাকাত, সিয়াম,হজ্জ, জিহাদ, আযান ও শরী‘আতের অন্যান্য বিধান ফরয করা হয়।

উত্তর: বদরের বড় যুদ্ধ,
উহুদের যুদ্ধ,
আহযাবের যুদ্ধ,
এবং মক্কা বিজয়ের যুদ্ধ।

উত্তর: আল্লাহ তা‘আলার বাণী: وَٱتَّقُوا يوۡمًا تُرۡجَعُونَ فِيهِ إِلَى ٱللَّهِۖ ثُمَّ تُوَفَّى كُلُّ نَفۡسٍ مَّا كَسَبَتۡ وَهُمۡ لَا يُظۡلَمُونَ “আর তোমরা সেই দিনের ব্যাপারে সতর্ক হও, যেদিন তোমাদেরকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তারপর প্রত্যেককে সে যা অর্জন করেছে তা পুরোপুরি প্রদান করা হবে। আর তাদেরকে যুলুম করা হবে না।” [সূরা আল-বাকারাহ: ২৮১]

উত্তর: তিনি ১১ হিজরীর রবী‘উল আওয়াল মাসে মারা গিয়েছিলেন। তখন তার বয়স ছিল তেষট্টি বছর।

উত্তর: ১- খাদীজাহ বিনতু খুওয়াইলিদ রদিয়াল্লাহু আনহা।
২- সাওদাহ বিনতু যাম‘আহ রদিয়াল্লাহু আনহা।
৩- আয়িশাহ বিনতু আবী বাকর রদিয়াল্লাহু আনহা।
৪- হাফসাহ বিনতু ‘উমার রদিয়াল্লাহু আনহা।
৫- যাইনাব বিনতু খুযাইমাহ রদিয়াল্লাহু আনহা।
৬- উম্মু সালামাহ হিনদা বিনতু আবী উমাইয়াহ রদিয়াল্লাহু আনহা।
৭- উম্মু হাবীবাহ রামলাহ বিনতু আবী সুফিয়ান রদিয়াল্লাহু আনহা।
৮- জুয়াইরিয়াহ বিনতুল হারিছ রদিয়াল্লাহু আনহা।
৯- মাইমূনাহ বিনতুল হারিছ রদিয়াল্লাহু আনহা।
১০- সফিইয়াহ বিনতু হুওয়াই রদিয়াল্লাহু আনহা।
১১- যাইনাব বিনতু জাহাশ রদিয়াল্লাহু আনহা।

উত্তর: ছেলে সন্তান তিনজন:
আল-কাসিম, তার নামেই রাসূলের উপনাম ছিল,
আব্দুল্লাহ
এবং ইবরাহীম।
কন্যা সন্তান:

ফাতিমাহ,
রুকাইয়াহ,
উম্মু কালছূম
এবং যাইনাব।
ইবরাহীম ব্যতীত তার প্রতিটি সন্তানই খাদীজাহ রদিয়াল্লাহু আনহার গর্ভ হতে জন্ম গ্রহণ করেছিল, আর ফাতিমাহ ছাড়া সকলেই তার পূর্বেই মারা গিয়েছেন, আর ফাতিমাহ (তার ওফাতের) ছয়মাস পরে মারা গিয়েছিলেন।

উত্তর: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাটোও ছিলেন না, আবার খুব লম্বাও ছিলেন না; বরং উভয়ের মাঝামাঝি ছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাল মিশ্রিত সাদা বর্ণের ছিলেন। তার দাঁড়ি ঘন ছিল। চোখ দুটি প্রশস্ত, বড় গাল বিশিষ্ট, চুল কুচকুচে কালো, কাঁধদুটি প্রশস্ত ও সুন্দর ঘ্রাণবিশিষ্ট ছিলেন। এ ছাড়াও আরো অনেক সুন্দর বৈশিষ্ট্য ছিল।

উত্তর: তার উম্মাতকে তিনি শুভ্র পথের (সুষ্পষ্ট দলিলের) উপরে রেখে গেছেন, যার রাত তার দিনের মতই, ধংসে নিপতিত ব্যক্তি ছাড়া কেউই সেখান থেকে বিচ্যুত হয় না, উম্মাতের জন্য প্রতিটি কল্যাণের কথাই তিনি ইঙ্গিত করেছেন, আর প্রতিটি অকল্যাণ থেকেও সতর্ক করেছেন।